কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস: পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা
ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা ঝামেলামুক্ত ও আরামদায়ক হওয়ায় ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম একটি বাহন হচ্ছে ট্রেন ভ্রমণ। স্বস্তিদায়ক যাত্রা ও ভাড়া মোটামুটি কম থাকায় অধিকাংশ মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করতে বেশি পছন্দ করেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারে যুক্ত হয়েছে, ঢাকা- কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস।
পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র এই কক্সবাজারে এতদিন সড়ক ও বিমান সার্ভিস থাকলেও ট্রেন সার্ভিস যুক্ত করেছে নতুন মাত্রা। নির্ঝঞ্ঝাট ভ্রমণ ব্যবস্থার কারণে হোটেল ও রিসোর্ট মালিকেরা বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন।
এক নজরে ঢাকা - কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস
ঢাকা- কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ায় কক্সবাজার এখন রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত হলো সারাদেশের সাথে। সকল জেলার সাথে রেলপথের এই সংযোগ পর্যটন শিল্প দেখছে নতুন সম্ভাবনা। সকল কিছুর অবসান ঘটিয়ে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সরাসরি ট্রেন চলবে ঢাকা টু কক্সবাজার রুটে। দেখে নেওয়া যাক, এই ট্রেন সার্ভিসের বিস্তারিত-
- ট্রেন সার্ভিস: ঢাকা টু কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস
- দূরত্ব: ৫৫১ কি. মি.
- পৌছানোর সময়: ৭/৭.৫ ঘন্টা
- গতিসীমা: ১৩০ কি. মি./ঘন্টা
- যাত্রা শুরু ঢাকা: রাত ১০.৩০ মিনিট
- যাত্রা শুরু কক্সবাজার: দুপুর ১.০০ টা
পর্যটন শিল্পের কেন্দ্রভূমি কক্সবাজার
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত একটি সৈকত। ১২০ কিলোমিটার (৭৫ মাইল) দীর্ঘ এই সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত। সমুদ্র সৈকতের অপার্থিব সৈন্দর্য ও আশে পাশের সবুজ শ্যমল পাহাড় থাকার কারণে, এই এলাকা বহু আগে থেকেই পর্যটকদের আকৃষ্ট করেছে ।
নীলাভ জলরাশি আর সামুদ্রিক নানা মুখরোচক খাবারের টানে লক্ষ লক্ষ পর্যটক ছুটে আসে এই সৈকতে। যোগাযোগের সহজ মাধ্যম ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়ায় পুরো বাংলাদেশের জন্য কক্সবাজার হয়ে উঠেছে এক বৃহৎ পর্যটন হাব।
পর্যটন শিল্পে ট্রেন সার্ভিসের প্রভাব
যেকোন স্থান তখনই পর্যটন প্রিয় হয়ে ওঠে, যখন সেখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ ও আরামদায়ক হয়। ঢাকা- কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস এই বিষয়গুলো নিশ্চিত করায় পর্যটন শিল্পে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পূর্বে ঢাকা থেকে সড়কপথে কক্সবাজার পৌঁছাতে সময় লাগত অন্তত ১০ ঘণ্টা, এখন সেখানে লাগবে প্রায় ৭ ঘন্টা। যাত্রার সময় কমে যাওয়ায় কক্সবাজার দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নতুন করে আকর্ষণ করবে।
ট্রেন সার্ভিস চালুর ফলে পর্যটকরা কক্সবাজারে ট্রেনে করে সকালে গিয়ে রাতের ট্রেনে ফিরে আসতে পারবেন। কক্সবাজারের গতানুগতিক পর্যটন পরিষেবার বিপরীতে রেল যোগাযোগ নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসবে এটাই আশা করা যাচ্ছে। পর্যটন খাতে ট্রেন সার্ভিসের প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হলো-
- অধিক পর্যটকের আগমন: মোটামুটি কম ভাড়া, সময় সাশ্রয়ী ও নিরাপদ জার্নির কারণে মানুষ পর্যটন নগরী কক্সবাজার ভ্রমণে অধিক আগ্রহ প্রকাশ করবে। অধিক পর্যটকদের আগমনের কারণে, পর্যটন সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। ফলে দেশীয় এই শিল্প আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম হবে।
- আন্তর্জাতিক আগ্রহ বৃদ্ধি: বিশ্বের সর্ববৃহৎ ও নয়নাভিরাম সমুদ্রসৈকত হচ্ছে এই কক্সবাজার। পর্যটনের এই কেন্দ্রভূমিতে ট্রেন সার্ভিস শুধু দেশীয় নয় বরং বিদেশী পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করবে। এছাড়াও কক্সবাজার ট্রেন স্টেশনের সৌন্দর্য ও সুবিধা পর্যটকদের আগ্রহের নতুন কারণ হয়েছে। যা পর্যটন শিল্পের নতুন মাইলফলক।
- কুটির শিল্প ও হস্ত শিল্পের বিকাশ: দেশ এবং দেশের বিরে থেকে পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধির কারণে, কক্সবাজেরর স্থানীয় নানা কুটির শিল্প ও হস্ত শিল্পের বিকাশ সাধিত হবে, যা মূলত পর্যটকদের চমকপ্রদ ও আকৃষ্ট করবে।
ঢাকা - কক্সবাজার ট্রেন: রিসোর্টগুলোর সম্ভাবনা
পর্যটকদের ভ্রমণকে আনন্দদায়ক ও চমকপ্রদ করে তুলতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে রিসোর্টগুলোর ওপর। ট্রেন সার্ভিসের কারণে অধিক পর্যটক আসায়, বানিজ্যিকভাবে লাভবান হবে রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা এবং এই খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে পর্যটন শিল্পের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন হবে আশা করা যায়।
এছাড়া নানা রকম ভ্রমণ প্যাকেজ ও নতুন নতুন সুযোগ সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে হোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা পর্যিটন শিল্পের এই অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারেন।
সারসংক্ষেপ
কক্সবাজার বিখ্যাত হয়ে আছে, পৃথিবীর বৃহৎ সমুদ্রসৈকত, হিমছড়ি বিচ, ইনানী বিচ, মাহেশখালী দ্বীপ, সোনাদিয়া দ্বীপ এবং বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন আইল্যান্ড এর জন্য। যার কারণে এসকল স্থান দেশি এবং বিদেশী পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে সবসময়। ফলে এসকল স্থান ভ্রমণে হোটেল বা রিসোর্টে আমাদের থাকতে হয়। কিন্তু ভ্রমণে সঠিক রিসোর্টে না থাকতে পারলে, অর্ধেক আনন্দই হয় নষ্ট। তাই আপনারা যারা কক্সবাজার ভ্রমণের চিন্তা করছেন, তাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক গন্তব্য হতে পারে ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা- প্রকৃতির মাঝে এক প্রশান্তিদায়ক যাত্রা।
রিসোর্ট বুকিংBook your favorite room or villa to explore the next best thing.